বঙ্গবন্ধু সাফারিতে দেয়াল ভেঙে ঢুকে পড়ল হাতির দল

কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের দেয়াল ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েছে বন্য হাতির দল। দলে রয়েছে ছোট-বড় ১৩টি বন্য হাতি। খাবারের সন্ধানে দলটি পার্কে ঢুকেছে বলে ধারণা করছেন বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার ভোররাতে হাতি পার্কের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের সীমানা দেয়াল গুঁড়িয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ে। এসব হাতি বর্তমানে পার্কের জীববৈচিত্র্য জোন এলাকায় অবস্থান করছে। অবশ্য পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তত্পরতায় তিনটি হাতি বেরিয়ে লামা সীমান্তের গহিন জঙ্গলে চলে যায়।

পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, হাতির দলে রয়েছে ছোট-বড় ১৩টি বন্য হাতি। এর মধ্যে তিনটি হাতি ভোরের আলো ফোটার পর বেরিয়ে গেলেও বাকি ১০টি পার্কের বন্য প্রাণী আবাসস্থল উন্নয়ন এবং চারণভূমি সৃজনের তিনটি প্রকল্পের দুই শ হেক্টর এলাকায় সৃজিত ফলদ ও বনজ বাগানে ব্যাপক তাণ্ডব চালাচ্ছে। সেখানে খাবারের নিরাপদ আবাস খুঁজে পাওয়ায় কোনোভাবেই বন্য হাতিগুলো সরানো যাচ্ছে না। এ অবস্থায় পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জীববৈচিত্র্য জোন এলাকায় কড়া পাহারা বসিয়েছে, যাতে হাতিগুলো পার্কের বন্য প্রার্ণী বেষ্টনী তথা পর্যটক-দর্শনার্থীদের ঘুরে বেড়ানোর জায়গায় আসতে না পারে।

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের সীমানার কাছের বাসিন্দা পূর্ব মাইজপাড়ার আবদুল হামিদ ও লাঠের ঘাট এলাকার আবু ছৈয়দ গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গত বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে গহিন জঙ্গল থেকে একটি হাতির পাল তাঁদের পাড়া হয়ে পার্কের সীমানা দেয়াল ভেঙে বন্য প্রাণী আবাসস্থলের সৃজিত বাগানে ঢুকে পড়ে। লোকালয়ে হানা দেয় কি না, এই ভয়ে দুই পাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।

সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে খাবারের সন্ধানে শাবকসহ ১৯টি বন্য হাতির একটি দল পার্কের বগাচতর মৌজা, পাগলির বিল মৌজায় সৃজিত বন্য প্রাণী আবাসস্থল উন্নয়ন ও চারণ ভূমি সৃজন প্রকল্পের জীববৈচিত্র্য এলাকায় ঢুকে তাণ্ডব চালায়। এবারও একটি হাতির পাল সেই বাগানে হানা দিয়েছে। তাই পার্কে আগত পর্যটক-দর্শনার্থীদের ভ্রমণের স্থান তথা পার্কের বন্য প্রাণীর বেষ্টনী এলাকায় যাতে হাতিগুলো আসতে না পারে, সে জন্য কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।’

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক ও চট্টগ্রাম বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খাবারের সন্ধানে প্রতিনিয়ত হাতির পালটি সাফারি পার্কে ঢুকে পড়ে। এই অবস্থায় পার্কের পর্যটক-দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’